বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবীসহ বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগুনের ঘটনায় ৮ জন গ্রেফতার

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়ার অন্যতম পরিকল্পনাকারী এবং জনবলদাতা কাজী মনসুর আলম ও বিএনপির পক্ষে আশ্রয় এবং অর্থদাতা হিসেবে নবীউল্লাহ নবীসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি লালবাগ এবং ওয়ারী বিভাগ। পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত যুবদল নেতারা হলেন কাজী মনসুর আলম, মো. ইকবাল হোসেন স্বপন, মো. রাসেল, দেলোয়ার হাকিম বিপ্লব, মো. সালাউদ্দিন, মো. কবির, মো. হাসান আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী।

শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ট্রেনে আগুন লাগার আগে বিএনপির ১০/১১ জন ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনা করেন।

গ্রেফতারের পর ট্রেনে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যুবদল নেতা কাজী মনসুর জবানবন্দির এক ভিডিওতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। কাজী মনসুর বলেন, ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়ার আগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি একটি মিটিং হয়। মিটিংটি শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ মিনিটের এই মিটিংয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার জন্য। এর পরে শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়।’

 

জিজ্ঞাসাবাদে কাজী মনসুর ডিবিকে জানায়, তারা গতকাল একটি ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়নসহ আরও অনেকে ছিলেন। প্রায় ১৭ মিনিট ধরে মিটিংটি চলে। ভার্চুয়ালি এই মিটিং এ দুটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রথম সিদ্ধান্ত ভোট কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ করার জন্য, যাতে করে ভোটাররা ভয়ে সেখানে না আসে।

আর দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার। এ সময় মিটিংয়ে যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম নয়ন জিজ্ঞাসা করেন ট্রেনে আগুন দিতে পারবে কে। তখন মিটিংয়ে উপস্থিত একজন রাজি হয় ট্রেনে আগুন দেওয়ার বিষয়ে।

এদিকে শনিবার (৬ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের পরিকল্পনা হিসেবে বিএনপির হাইপ্রোফাইল নেতারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। কনফারেন্সে প্রথমে আসেন মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনাম। এরপর আসেন সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফফার, ইকবাল হোসেন বাবলু, একজন দপ্তর সম্পাদক ও কাজী মনসুর।

ডিবিপ্রধান আরও বলেন, যে মোবাইল থেকে ভিডিও কনফারেন্স করা হয়েছিল সেই মোবাইলটি উদ্ধার করেছে ডিবি। মোবাইলটি কাজী মনসুরের। তিনি আমাদের কাছে গ্রেফতার আছেন। যারা এক সময় জেলখানায় দাগি আসামি হিসেবে পরিচিত ছিল তারা এই অগ্নিসংযোগ করে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *