ভারতে বিজেপির বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার শিরচ্ছেদ করার ডাক দিয়েছেন, এই অভিযোগে আজমির শরিফ দরগার একজন খাদেমকে রাজস্থান পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
নূপুর শর্মার মাথা কেটে এনে কেউ তাঁকে দিতে পারলে তিনি ওই ব্যক্তিকে নিজের বাড়িটাই লিখে দেবেন, সালমান চিস্তি নামে ওই খাদেমের বলা এমন একটি ভিডিও ক্লিপ সে দেশে ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিও ক্লিপের সত্যতা অবশ্য বিবিসি যাচাই করতে পারেনি, তবে এই ধরনের বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে সালমান চিস্তির বিরুদ্ধে সোমবার রাতেই একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।
রাজস্থান পুলিশ তারপর থেকেই তাঁকে খুঁজছিল।
ওই ভিডিও ক্লিপের ব্যক্তিটিকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের নবীকে অপমানের বদলা নিতে পারলে আমিই গুলি করে নূপুর শর্মাকে মেরে ফেলতাম।”
এরপরই তিনি বলেন, কেউ যদি নূপুর শর্মার মাথা কেটে এনে তাকে দিতে পারে তাহলে নিজের বাড়িটাই তিনি তাকে উপহার দেবেন।
“আপনাকে তো সব মুসলিম দেশের কাছে একটা জবাব দিতে হবে। রাজস্থানের আজমির থেকে এ কথা আমি বলছি, বার্তা দিচ্ছি হুজুর খাজা বাবার দরবার থেকে”, আজমিরের বিখ্যাত সুফি উপাসনালয়ের প্রসঙ্গ টেনে ওই ব্যক্তি মন্তব্য করেন।
বার্তা সংস্থা পিটিআই রাজস্থানের পুলিশ কর্মকর্তা দলবীর সিং ফৌজদারকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, ধৃত সালমান চিস্তির এর আগেও একাধিকবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ইতিহাস আছে।
আজমিরের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বা ‘দেওয়ান’ জইনুল আবেদিন আলি খানের কার্যালয় অবশ্য বিবৃতি দিয়ে ওই ভিডিওর তীব্র নিন্দা করেছে এবং বলেছে আজমির শরিফ হল ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্থান’।
একজন ‘খাদেমে’র বক্তব্য কিছুতেই দরগার বক্তব্য হতে পারে না – এবং এটিকে একজন ব্যক্তিবিশেষের চরম নিন্দনীয় কথাবার্তা হিসেবেই দেখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
ওই মন্তব্য সামনে আসার পর মূলত আরব বিশ্বের দেশগুলোর চাপে বিজেপি নূপুর শর্মাকে দল থেকে বহিষ্কার করতে বাধ্য হয়।
ইতিমধ্যে দেশের ‘বর্তমান পরিস্থিতি’র জন্য সুপ্রিম কোর্ট এককভাবে নূপুর শর্মাকে দায়ী করে তাকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে, তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মিস শর্মার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও তিনি গ্রেপ্তার হননি।
এদিকে গত সপ্তাহে রাজস্থানেরই উদয়পুরে নূপুর শর্মার সমর্থনে পোস্ট দেওয়ার জন্য একজন হিন্দু দর্জি দুজন মুসলিম যুবকের হাতে যেরকম নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন, তারপর গোটা রাজ্যেই সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।