‘অশনি’ গতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের উপকূলে আঘাত হানতে পারে

বঙ্গোপসাগর ও এর অশপাশের এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ আজও শক্তিশালী অবস্থানে থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত শক্তি অর্জন করছে। এর গতিমূখ এখন পর্যন্ত ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশের দিকে আছে। তবে এটি যে কোন মূহূর্তে গতি পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এটি যেখানেই আঘাত হানুক না কেন, এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলসহ বেশির ভাগ এলাকায় ১১ মে থেকে বৃষ্টি হতে পারে।
আজ সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বাসস’কে জানান, ‘চিন্তার কোনো কারণ নেই। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী যেভাবে ছিল এখনও সেভাবেই আছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। যেভাবে আছে, সেখান থেকে আজ তেমন পরিবর্তন হয়ত হবে না। বরং এটি আগামিকাল থেকে আস্তে আস্তে দুর্বল হতে পারে। আজ পর্যন্ত এটা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকবে। আজ এর গতিপথ কোনো পরিবর্তন হবে না। আজকের পর অশনির গতিপথ পরিবর্তন হবে কিনা তাও বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে যে গতিপথে আছে তাতে আগামিকাল মঙ্গলবার এটি ভারতের উপকূলের আছড়ে পড়তে পারে। এ কারণে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় দেশের চার সমুদ্র বন্দরে আগের মতো ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নদী বন্দর গুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশ শঙ্কামুক্ত থাকবে। তবে কোথাও কোথাও বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও বাতাস বয়ে যেতে পারে। এখন পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী, এটি ভারতের ওডিশার দিকে ধাবিত হচ্ছে। তবে উপকূলে ধেয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কমে যাবে। যার ফলে বাংলাদেশে এর সেভাবে প্রভাব পড়বে না বলে দৃশ্যমান হচ্ছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিন-৮ অনুযায়ী, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সোমবার সকাল ৬ টার দিকে চট্টগ্রাম সমদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি নি¤œচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
অন্যদিকে, মে মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে ১ থেকে ২ টি নি¤œচাপ সৃষ্ট হতে পারে। উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত ২ থেকে ৩ দিন মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী বা বজ্র ঝড় এবং অন্যস্থানে ৩ থেকে ৪ দিন হালকা বা  মাঝারি কালবৈশাখী বা বজ্র ঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *