তীব্র শীতে হাসপাতালে অসুস্থ রোগীর ভিড়

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : হিমালয়ের কোল ঘেঁষা দেশের সর্ব উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। হিমালয় থেকে নেমে আসা হিমেল হাওয়ায় জেলার তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে শুরু করেছে। দিনের তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও বিকেলের পর থেকে ঘন কুয়াশার সাথে ঝিরি ঝিরি বাতাসে রাত ও ভোরের তাপমাত্রা খুবই কমে আসে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জেলায় তাপমাত্রা ছিল ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যার ফলে শৈত্যপ্রবাহ আর ঘনকুয়াশায় দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল ও দরিদ্র মানুষের।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ এলাকায় আগাম শীত এলেও এবার মৌসুমের শুরুতে রাতের তাপমাত্রা কম থাকলেও সকালে সূর্য ওঠার পর সেভাবে শীত অনুভূত হয়নি। তবে পৌষের শুরুতে এবং গত তিনদিনের আবহাওয়া একেবারেই ভিন্ন। সেভাবে সূর্যের দেখা মিলছে না। সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ আর ঘনকুয়াশা।

স্থানীয়রা জানায়, বিকাল থেকেই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করে। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ে। আর ভোর থেকে চারপাশে থাকে ঘনকুয়াশা। শীত জেঁকে বসায় গরিব লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে মানুষের চলাচল কম। দরিদ্র পরিবারের লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। প্রয়োজন ছাড়া রাতে কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। কাজে যেতে না পারায় শ্রমজীবী মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ ভিড় করছেন পুরনো কাপড়ের দোকানে।

এছাড়া লেপ-তোষক তৈরীর দোকানে দিনেরাতে চলছে লেপ তোষক তৈরীর কাজ। সুযোগ বুঝে দাম ও মজুরী বাড়িয়ে দিয়েছেন গরম কাপড়ের ব্যবসায়ী এবং লেপ-তোষকের দোকান মালিক।

অপরদিকে তীব্র শীতে অসুস্থ হয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ৮৬ জন শিশু ও ১৬ জন বয়স্ক ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে, শীত উপেক্ষা করে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে ভাপা, চিতইসহ নানা রকমারি পিঠার দোকান বসিয়ে আয় উপার্জন করছেন অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। যানবাহনগুলো অনেক বেলা অবধি হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। তবে এ এলাকায় শীতের তীব্রতা বেশি হওয়ায় শীতবস্ত্র প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ঠাকুরগাঁও জেলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ৩২ হাজার ৬শ’ পিস কম্বল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবগুলোই বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও ২৫ হাজার পিস কম্বলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *