জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সংস্কার প্রয়োজন

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান দেশে ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়নের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কারের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, অনুৎপাদনশীল খাতে  সরকারি বরাদ্দ দেওয়া অন্যায়। তিনি বলেন, অনেক সমস্যার মধ্যেও বর্তমান সরকার  গত ১০ বছরে লক্ষ্যমান, দৃশ্যমান ও প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নয়ন করেছে। দেশে ব্যবসায়, পরিবেশে সমস্যা আছে। তবে বড় সমস্যা হচ্ছে একটি শ্রেণি বলছে, তারা নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এ ধরনের মতামতের বিষয়ে দেশের ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজকে  মতামত জানানোর আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) ও ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। আইসিএবি সভাপতি শাহাদাৎ হোসেনের সভাপতিত্বে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সিএ ভবনে ‘সামষ্টিক অর্থনীতি: ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে প্রত্যাশা’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী, অর্থনীতিদ ও হিসাববিদরা রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার, কর্পোরেট কর কমিয়ে আনা, করোনা প্রভাব মোকাবেলা এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে সৃষ্টি হওয়া নতুন বৈশি^ক পরিস্থিতিতে করণীয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি, এসএমই খাতের বিকাশ, সরকারি ব্যয়ের সুষ্ঠু ব্যবহার, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাজেট বরাদ্দ দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আইসিএবি সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দেশ এগোচ্ছে। তবে বৈষম্যও বাড়ছে। এর কারণ হচ্ছে পরোক্ষ কর। তিনি প্রত্যক্ষ কর ও অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিবর্তে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি স্বযংক্রিয় কর ব্যবস্থা, করের অর্থের সঠিক ব্যবহার, সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোসহ সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থার ওপর জোর দেন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও ক্যাম্পেইন ফর পপুলার এডুকেশনের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী বলেন, বাজেট থেকে যে বিনিয়োগ হয় সেখানে সংস্কার দরকার। শিক্ষা খাতের জন্য পূর্ণাঙ্গ বাজেট দিতে হবে। তিনি বলেন, জাতির জনক যুদ্ধবিধ্বস্ত-দেশে প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছিলেন। তখন জিডিপি ছিলো ১৪ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কেন জাতীয়করণ হবে না?
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনন্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, করোনা পরবর্তী পুনরুদ্ধার ভালো হচ্ছে। তবে বৈশি^ক পরিস্থিতি বিবেচনায় সুচিন্তিত পদক্ষেপ দরকার। আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এখন রিজার্ভ খরচের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এখন সুদহারে সর্বোচ্চ সীমা রাখা ঠিক হবে না। তিনি কর নীতি ও কর প্রশাসনকে আলাদা করা, এসএমই খাতের বিকাশের জন্য গ্যারান্টি স্কিম বাড়ানো, ভ্যাট আইন সংস্কারের প্রস্তাব করেন তিনি।
এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর পরিকল্পনা অনুযায়ী অনেক কাজ করা সম্ভব হয়নি। ফলে অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা পুনঃমুল্যায়ন করা দরকার। কারণ এই পরিকল্পনা যখন করা হয়েছিলো তখন করোনা, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ছিলো না। তিনি কর্পোরেট কর কমানো ও সকল রপ্তানি খাতে সমান সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *